আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাধারণত কেবল একটা দেশের প্রতিনিধিত্বই করেন ক্রিকেটাররা। তবে ভিন্ন চিত্রও আছে। দুই দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন এরকম ক্রিকেটারও আছেন অনেকেই।
১. ইয়ন মরগান
বর্তমান ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ন মরগান অনুর্ধ্ব-১৭ আর অনুর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট খেলেছেন আয়ারল্যান্ডের হয়ে। ২০০৪ সালের অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে অধিনায়কও ছিলেন আয়ারল্যান্ড দলের। ২০০৭ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেওয়া আয়ারল্যান্ড জাতীয় দলের সদস্যও ছিলেন মরগান। ইংল্যান্ডে কাউন্টি ক্রিকেট খেলা শুরু করা মরগান বিগ হিটিং অ্যাবিলিটির কারণে জায়গা পান ২০১০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইংল্যান্ড স্কোয়াডে। এরপর আয়ারল্যান্ড ছেড়ে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা শুরু করেন মরগান। এটাই হয়ত মরগানের ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট ছিল। এখন ইংল্যান্ড জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সামনে থেকে, ইংল্যান্ডের হয়ে জিতেছেন ২০১৯ বিশ্বকাপও।
২. জফরা আর্চার
বার্বাডোসে জন্মগ্রহণ করা তরুণ প্রতিভাবান পেসার জফরা আর্চার ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে অনুর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটে খেলেছেন, বেশ ভালোভাবেই খেলেছেন। হুট করেই একটা ইঞ্জুরির পর আর দলে ডাকা হয়নি আর্চারকে। ফিটনেসের উন্নতির পরেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড যেন ভুলেই গিয়েছিল আর্চারের কথা। এরপর বিগ ব্যাশ আর কাউন্টি ক্রিকেটে খেলা শুরু করেন আর্চার। নিজের গতি, বাউন্স, ইয়র্কার আর বৈচিত্র্য দিয়ে নজর কাড়েন সকলের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অবহেলার সুযোগটাই নিয়েছে ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ড জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার পর থেকেই দারুণ বল করে যাচ্ছেন আর্চার। ২০১৯ বিশ্বকাপেও অসাধারণ বল করেছেন আর্চার। বিশ্বকাপও জিতেছেন ইংল্যান্ডের হয়ে।
ইংল্যান্ডের পক্ষে বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদও পেয়েছেন আর্চার।
৩. লুক রনকি
অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডের ট্রান্স-তাসমান প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা সবারই জানা। দুই দেশের হয়েই ক্রিকেট খেলা একমাত্র ক্রিকেটার লুক রনকি। নিউজিল্যান্ডে জন্ম আর বেড়ে ওঠা অস্ট্রেলিয়াতে। অস্ট্রেলিয়ার হয়েই খেলা শুরু রনকির। তবে বাদ পড়েন বাজে ফর্মের কারণে, ফিরে যান জন্মভূমিতে, নিউজিল্যান্ডে। ২০১৩ সালের দিকে নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলা শুরু করেন রনকি। ২০১৫ বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলা নিউজিল্যান্ড দলের সদস্যও ছিলেন রনকি। এখন যুক্ত আছেন কিউইদের কোচিং স্টাফের সাথে।
২০ রানের কমতি দেখছেন রনকি
রনকি খেলেছেন বিপিএলেও।
৪. ইমরান তাহির
ক্রিকেট মাঠে আইকনিক উদযাপনকারী যত ক্রিকেটার আছে তার মধ্যে অন্যতম ইমরান তাহির। পাকিস্তান অনুর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্য ছিলেন তাহির, ছিলেন এ দলেও। তবে পাকিস্তান দলে স্পিনারদের ভিড়ে জায়গা পাননি জাতীয় দলে। পরে সাউথ আফ্রিকায় গিয়ে সাউথ আফ্রিকার জাতীয় দলে সুযোগ পান তাহির।
ওয়ানডে অভিষেক হয় ২০১১ সালের বিশ্বকাপে। এরপর থেকে দলের স্পিনকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন তাহির। ওডিআই আর টি-টোয়েন্টিতে একইসাথে আইসিসি র্যাংকিংয়ে ১ নাম্বারে থাকা একমাত্র বোলারও তাহির। ওয়ানডে থেকে অবসর নেন ২০১৯ বিশ্বকাপের পর, তবে খেলা চালিয়ে যাওয়ার কথা টি-টোয়েন্টিতে।
৫. ডার্ক ন্যানেস
নেদারল্যান্ড ক্রিকেটের সবচাইতে গতিময় বোলারদের মধ্যে ন্যানেস অন্যতম। নেদারল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়া দুই দলের হয়েই খেলা খুব অল্প সংখ্যক ক্রিকেটারদের ন্যানেস অন্যতম। দারুণ গতি ছিল ন্যানেসের বলে।
বিপিএলের ফিক্সিংয়ে মালিকরা এগিয়ে আসত: ন্যানেস
টি-টোয়েন্টি স্পেশালিষ্ট হিসেবেই পরিচিত ছিলেন ন্যানেস। ২০১০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে ফাইনালে তুলতে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।